একটা মেয়ে আল্লাহর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টিগুলোর মধ্যে একটি !!
পারিবারিক সূত্রে জন্ম গ্রহণ করলে যেমন সম্পূর্ণ মুসলমান হওয়া যায় না। তেমনি মেয়ে হয়ে জন্ম গ্রহণ করলেই, সবাই পরিপূর্ণ নারী বা "ভদ্র নারী" হওয়া যায় না। 'ভালো মেয়ে' তকমা লেগে যাওয়া প্রতিটি মেয়ে কি "ভদ্র মেয়ে" ???
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের সফলতা ও ব্যর্থতা সুস্থ চিন্তা ও সঠিক কর্মের সাথে সম্পৃক্ত। ইসলাম পরিস্কার ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, মর্যাদা লাঞ্ছনা এবং মহত্ত্ব ও নীচতার মাপকাঠি হলো তাকওয়া-পরহেযগারী এবং চরিত্র ও নৈতিকতা। এ মাপকাঠিতে যে যতটা খাঁটি প্রমাণিত হবে মহান আল্লাহর কাছে সে ততটাই সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবে।
আল্লাহ বলেন,
‘‘পুরুষ বা নারীর মধ্য থেকে যে-ই ভালো কাজ করলো সে ঈমানদার হলে আমি তাকে একটি পবিত্র জীবন যাপন করার সুযোগ দেব এবং তারা যে কাজ করছিল আমি তাদেরকে তার উত্তর পারিশ্রমিক দান করব।’’ [ সূরা আন-নাহল: ৯৭]
আল্লাহ আরো বলেন,কে ভালো কে খারাপ তা বিচার করার ক্ষমতা পৃথিবীর মানুষের কই, উপরে একজন আছেন তিনিই জানেন কে কতটুকু শুদ্ধ........
‘‘তাদের রব তাদের দো‘আ কবুল করলেন এ মর্মে যে, পুরুষ হোক বা নারী হোক তোমাদের কোনো আমলকারীর আমল আমি নষ্ট করব না।’’ [সূরা আলে-ইমরান: ১৯৫]
সুন্দর, শান্ত, মায়াবতী, রান্না, পড়াসুনা আর উচ্চ শিক্ষিত হলে যেন জব করে, তাহলে তার কারো উপর নির্ভর করতে হবে না আর নিজের অধিকার সম্পকে সচতেন হলেই মেয়েটি সর্ব গুন সম্মত আর ভালো মেয়ে হবে তা নয়, এটা সবার সম্পূর্ণ ভুল ধারনা।
হুট করে তো আর 'ভালো মেয়ে'র লোগোটা নামের আগে লেগে যায় না। ছোট্ট বেলায় খুবই সচেতন ভাবে পরিবার বিশেষত আমাদের সহজ সরল আম্মুরা এই ভয়াবহ (!!) বিশেষনটা আমাদের মাথায় একটু একটু করে ঢুকিয়ে দেন। আসলে কি সে সমাজের সবার কাছে ভাল ? ভালো মেয়ে চেনার কিছু উপায় দেওয়া হল।
কি কি গুন থাকলে একটি মেয়েকে ভালো বলা যায় ?
- সে খুব ছোটবেলা থেকেই সবকিছুর কারন বুঝতে শিখে। সে নিজে চকলেট না খেয়ে ছোট ভাইটিকে দিয়ে দেয়। সে তার পিতামাতার জন্য নিজের ভালবাসা উৎসর্গ করে।
- ভালো মেয়েরা লজ্জাবতী হবে। পোশাক নিয়ে খুব সচেতন থাকতে হবে। এমন কিছু পরে না যাতে করে বাহিরের কেউ চোখ তুলে তাকাতে সাহস করে।
- ভালো মেয়েরা প্রেমের ব্যাপার খুব সিরিয়াস থাকে। তারা সচারাচর প্রেমে জড়াতে চাই না, কিন্তু যদি কারো সাথে প্রেমে জড়িয়ে যায়, তাহলে মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে তা টিকিয়ে রাখতে।
- ভালো মেয়েরা সবসময় বন্ধু, পরিবার এবং বয়ফ্রেন্ডকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেয়। একটির জন্য অপরটির উপর প্রভাব পরুক তা তারা চায় না। যার জন্য তাদের ঝামেলা পোহাতে হয় বেশি।
- ভালো মেয়েদের রাগ একটু বেশি। যার উপর রেগে যায় তাকে মুখের উপর সব বলে দেয়। মনে কোনো রকম রাগ, হিংসে লুকিয়ে রাখে না। এতে অনেকের কাছে ঝগড়াটে উপাধিও পেয়ে বসে।
- ভালো মেয়েদের রাগের ঝামেলা পোহাতে হয় বিশেষ করে তাদের বয়ফ্রেন্ডকে। এরা রেগে থাকলে অযথা বয়ফ্রেন্ডকে ঝাড়ে। পরবর্তীতে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সরি বলে। যে মেয়ে তার বয়ফ্রেন্ডকে সরি বলে তাহলে বুঝতে হবে সে তার বয়ফ্রেন্ডকে খুব বেশি ভালোবাসে।
- সে তার স্বামীর আরাম-আয়েসের জন্য নিজের সুখ ত্যাগ করে। সে তার পুরো যৌবন ত্যাগ করে কোন প্রকার অভিযোগ ছাড়া শুধুমাত্র তার স্বামী ও সন্তানের জন্য।
- ভালো মেয়েরা সাধারণত ফেসবুকে ছবি আপলোড দেয় না। যদি দেয় তাহলে প্রাইভেসি দিয়ে রাখে। ফেসবুকে কতিপয় লুলু পুরুষ থেকে তারা ১০০ হাত দূরে থাকে।
- ভালো মেয়েদের ফেসবুক বন্ধু/বান্ধবের সংখ্যা খুব সীমিত থাকে।
- ভালো মেয়েরা আড্ডা বাজিতে খুব একটা যেতে চায় না। যার জন্য তাদের বন্ধু/বান্ধব থেকে ভাব্বায়ালি/আনকালচার খেতাব পেতে হয়। তবে তারা সব সময় সামাজিকতা মেনে চলে ।
- ভালো মেয়েদের কবিতা লেখার প্রতি আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা যায়। তারা তাদের লেখা কবিতা সচরাচর কাছের মানুষ ছাড়া কাউকে দেখাতে চায় না।
- ভালো মেয়েরা সাধারণ ঘর কুনো স্বভাবের বেশি হয়।
- ভালো মেয়েদের কাছে পরিবারের সম্মানটুকু সবার আগে। তারা পরিবারের সম্মানের বিরুদ্ধে কোনও কাজ কখনো করে না।
- পরিশেষে তার জীবন শেষ হয় শুধুমাত্র অন্যের সুখের জন্য নিজের সুখ ত্যাগ করে।
নারী জাতি সৃষ্টিকর্তার এমন একটি সুন্দর সৃষ্টি যে কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে না !! যদি নারীরা তাদের নিজেকে বাজারের পণ্য না করে, নিজের কিছু ইচ্ছা গুলো এবং চরিত্র কিছুটা পরিমাজিত রেখে সমাজের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চলতে চেষ্টা করে তবেই সে একজন "ভদ্র মেয়ে" হতে পারবে।
# সময়ের কাজ সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে সম্পন্ন করা। অপরের ভাল করতে না পারলেও তার ক্ষতির চিন্তা না করা। মানুষ মাত্রই লোভী। কিন্তু সেই লোভকে একান্ত প্রয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা অপরকে কোন সময়ই ছোট করে না দেখা। মানুষের দূর্বল জায়গায় আঘাত না করা। নিজেকে, নিজের দেশকে ভালবাসা । যে নিজেকে ভালবাসতে পারে না সে নিজের দেশকে, দেশের মানুষকেও ভালবাসতে পারে না । নিজের উপর বিশ্বাস রাখা । সর্বদা সত্য কথা বলা । নিজ নিজ ধর্মের বিধি-বিধান গুলো মেনে চলা।
যে একজন ভালো মেয়ে সে -
১. অবশ্যই নিজেকে,সৃষ্টিকর্তা এবং সৃষ্টিজগতকে ভালোবাসবে,
২. অবশ্যই সত্যবাদী হবে এবং
৩. সচ্চরিত্রের অধিকারী হবে !
সবশেষে একটাই কথা - আমরা আমাদের আশেপাশের মেয়েদের টিজ করি !! একবারও কি নিজের
বোন ,মা ,স্ত্রীর কথা ভেবেছি?? ভাবিনি !!
যদি ভাবতাম তাহলে
>>ইভ টিজিং করতে পারতাম না !!
>> তাঁদের বেক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতাম না!!
>>তাঁদের অস্রদ্ধা করতাম না!!
>>সমাজ সৃষ্ট কিছু taboo র কারনে আমরা তাদের পর্দার আরালে থাকতে বলতাম না!!
নারীদের প্রতি কোমল ব্যবহারের গুরুত্ব প্রকাশ করছে কুরআনের নিম্নোক্ত নির্দেশ,
‘‘আর নারীদের সাথে সদয় আচরণ কর।’’ [সূরা আন-নিসা: ১৯]
এক সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীগণ উটের পিঠে সফর করছিলেন। স্ত্রীদের কাঁচের সাথে তুলনা করে তিনি বললেন,
‘‘কাঁচগুলোকে (স্ত্রীদেরকে) একটু দেখে শুনে যত্নের সাথে নিয়ে যাও।’’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬১৮২]
উপরের আলোচনা থেকে আমরা নারী জাতি সম্পর্কে ইসলাম মানুষের মধ্যে যে মেজাজ, আবেগ ও সহানুভূতি সঞ্চার করতে চেয়েছে তা সহজেই উপলব্ধি করতে পারি।
যদি পারেন কথাগুলো সবাই মাথায় রাখবেন !!
⇔ প্রতিটি মেয়েকে শ্রদ্ধা করুন!!
আপনি হয়তো নিজেও জানবেন না আপনার জন্য "সে" কখন কি ত্যাগ স্বীকার করবে !!
আর্টিকেলটি ভাল লাগলে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন সর্বত্র