আপনার সব মোটিভেশন এসে ব্যার্থ হয় এখানেই


Life is All About How We See Things.

খুব সহজেই থীওরিটিক্যালী কাওকে মোটিভেট করা যায়। সহজেই বলা যায় কাম অন ম্যান ইউ ক্যান ডু ইট। সেট ইওর গোল, ফোকাস অন ইট। অফকোর্স ইউ উইল বি সাক্সেস!
আমরা কাওকে মোটিভেট করতে তার হাতে কিছু সাক্সেসফুল লোকের জীবনী ধরিয়ে দেই। সেও বেদম মোটিভেট হয়। ও মাই গড এত বাঁধা বিপত্তি পেড়িয়ে সে পেরেছে আমিও পারবো।
কিন্তু প্রাক্টিক্যাল লাইফে এসে সব থিওরি গুলি এক সময় পানি হয়ে যায়।
কিন্তু সুত্র তো ঠিক আছে তাহলে কাজ হবেনা কেনো!
বড় বড় মোটিভেটররা মোটিভেট করে তাদের সিচুয়েশন বুঝে কিন্তু আপনার সিচুয়েশন তো ভিন্ন। আমার বাবা কথায় কথায় আমাকে বলতো সে কত কষ্ট করে কত মাইল হেঁটে স্কুলে যেত। আর আমি আমার বাড়ির কাছের স্কুল কামাই দেই। বাবাকে বোঝানো তখন সম্ভব ছিলোনা যে কয়েক মাইল পথ হাঁটার চেয়ে এই যুগের ইন্টারনেট এবং টেকনোলোজির মোহ কাটিয়ে ওঠা আরো বেশি কঠিন। যখন প্রযুক্তি এত উন্নত ছিলোনা তখন মাইন্ড ডিস্ট্রাকশান অনেক বেশি কম হত।
শুক্রবার একদিন ছিলো পূর্ন দৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি। রাত আটটার দশটার সংবাদের বিরতিতে এমনিতেই ইচ্ছা করত পড়তে বসতে। কিন্তু এখন বিরতি আছে কোনো? এখন সিচুয়েশন ভিন্ন সমাধান তাই অন্য কিছু।
খেয়াল করুন। আপনি একটা নতুন ঘর তুলেছেন। একদম শুন্য একটা ঘর। সে ঘরে একে একে আপনি জিনিস ঢুকাতে থাকলেন। সোফা রাখলেন, খাট রাখলেন, ফ্রীজ রাখলেন। এখন আপনার ইচ্ছা হলো সোফার উপর বসে আপনি টিভি দেখবেন। ভেবে বলেন সম্ভব হবে?
না হবেনা। কারন আপনি ঘরে টিভি ঢুকান নি। যে জিনিস আপনার ঘরেই নেই তা শুধু কল্পনায় দেখা যায়।
আপনার সব মোটিভেশন এসে ব্যার্থ হয় এখানেই। ওই ঘরের মত আপনার একটা পরিবেশ আছে। সে পরিবেশ আপনি নিজে তৈরি করেছেন। আপনি আপনার চারপাশে তাদেরকেই দেখছেন যাদের আপনি বাইরে থেকে এনে আপনার জীবনে জায়গা দিয়েছেন।
আপনার ফেইসবুকে পঞ্চাশ হাজার ফলোয়ার এবং পাঁচ হাজার বন্ধু। ধরি আমার ফেইসবুকে তার কিছু কম। তাতে কি আপনি বা আমি সেলিব্রেটি হয়ে গেলাম। কিন্তু আমাদের সবার নিউজ ফীড গুলো কি এক? আপনি তেমন নিউজ আপনার নিউজ ফীডে দেখেন যেমন টাইপের বন্ধু আপনি এড করেছেন। আপনার নিজের ইচ্ছা, রুচি, মন-মানসিকতা যে রকম আপনার বন্ধুর তালিকাটা তো সে রকম হবে। এরকম হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। বর্তমানে Facebook তো আপনার মত লুলু মন-মানসিকতার মানুষে সয়লাব।

নামাজের মোটিভিশন নিয়ে চোরের সাথে মিশলে ক্যাম্নে আপনি ফোকাস ধরে রাখবেন? ডাক্তার হতে চেয়ে রংবাজের সাথে মিশলে ক্যাম্নে? ঘরের ভিতর নামাজ পরে বাহিরে বা ফেইসবুকে সব লুলু টাইপের ছেলেদের বন্ধু হবেন তবে কি ভাবে ভদ্র মেয়ে হবেন?

আপনি ভুল জিনিস দিয়ে আপনার চার পাশে সাঁজিয়েছেন। আসে পাশে সব ব্যার্থ মানুষ রেখে একজনের মোটিভেশনে আপনার কি হবে? বাবার সাথে পরিবারের সবাই মিলে দিনে আধা ঘণ্টা আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া চাইলেন। তাতেই আপনি একজন ভাল মুসলমান হয়ে গেলেন কি? এবং সে বাবাকে লুকিয়ে সাড়া দিন Facebook বা বাস্তবে সব লুলু টাইপের মানুষের সংস্পর্শে থাকবেন, তাহলে  কিভাবে আপনার সঠিক পথ বেছে নিবেন আর এমন প্রবঞ্চনা বাবাকে নয়, আপনি আপনাকে এবং আল্লাহকে প্রতারিত করছেন। মা বলবে খোকা ওঠ তুই পারবি, চারপাশ থেকে সবাই বলবে জীবন সিনেমা না। আমরা কেউ পারিনি। তুই সময় নষ্ট করবি?

নায়লা নাঈমের পেইজে লাইক দিয়ে ডাক্তার ফিলিপ্সের গল্প জানা যায়না। আগে সমস্যা বোঝেন। সমস্যার মুলে ঢুকে জার শুদ্ধ উপড়ে ফেলেন। ফেইস বুক থেকেই শুরু করেন। আজাইরা কমেন্ট, আজাইরা চ্যাটিং, আজাইরা বন্ধু, অটো লাইকার, নগ্ন লাইকার, ছোট মানসিকতার লুলু ভাই ব্রাদার সব ডিলেট মারেন। নতুন করে বন্ধু বানান। এরপর মোটিভেশনাল পোস্ট গুলা পড়েন। সফল ব্যাক্তিদের সাথে মেশেন। ফেইস বুক ভার্সিটি পাড়া মহল্লা সব খান থেকে ডি মোটিভেট করা লোক গুলো সরিয়ে ফেলেন।
বলছিনা একবারে মুছে ফেলেন। সমাজে চলতে হলে সবার সাথে মিশতে হয়। কিন্তু নিজের চারপাশে শুধু তাদের অস্তিত্ব রাখেন যাদের কাছ থেকে কিছু শেখার আছে। সামান্য ড্রয়ই রুম থেকে রোজ রোজ ঝাঁটা মেরে বাতিল জিনিস গুলো ফেলে দিচ্ছেন। জীবনটাও তো একটা ঘর সে ঘরটা সাঁজিয়ে রাখা দরকার না???

ছদ্মবেশী মুখোশ পরিধান করে আমাদের কোন লাভ নেই। হয়ত বাবা-মা সহ আশেপাশের মানুষ আমাদের আসল অন্তরের রুপ দেখতে পারলনা, তা আমরা লুক্কায়িত রাখতে পারলাম কিন্তু যার দেখার সে ১০০% দেখছেন আর তার থেকে আমরা কোন কিছুই বিন্দু পরিমাণ গুপ্ত রাখতে পারবনা।

মোল্লা ফ্যামিলি থেকে হলেই মুসলমান হওয়া যায় না। আগে নিজের মনকে প্রশ্ন করেন আপনি কি আল্লাহ্‌র দেখানো সঠিক পথেই আছেন না পথচ্যুত পথিকে পরিণত হয়েছেন। পথচ্যুত পথিক হয়ে থাকেন তাহলে এখনও সময় আছে, ভালো হতে সময় বা টাকা কোনটাই লাগে না, লাগে শুধু মনের সৎ ইচ্ছা।